সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৫৮ পূর্বাহ্ন
অনলাইন ডেস্ক: জানালা দিয়ে অন্যের ঘরে উঁকি দেয়ার অভিযোগ এনে রবিউল ইসলাম নামে পঞ্চাশোর্ধ এক ব্যক্তিকে গলায় জুতার মালা ও ঝাড়ু পরিয়ে গ্রাম ঘুরিয়েছেন গ্রাম প্রধানরা।শনিবার বিকালে পাবনার চাটমোহর উপজেলার ছাইকোলা কারিগরপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।এদিকে ঘটনার সময় মোবাইলে ধারণকৃত ভিডিওটি ফেসবুকে দিলে বিষয়টি ভাইরাল হওয়ায় এলাকায় তোলাপাড় শুরু হয়েছে।রবিউল ওই গ্রামের মৃত আরশেদ সরদারের ছেলে। তবে এ নিয়ে ওই এলাকায় অনেকের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।গলায় জুতার মালা ও ঝাড়ু পরিয়ে গ্রাম ঘুরানোর ঘটনায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন অনেকেই।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পেশায় দর্জি ও ফ্লেক্সিলোড ব্যবসায়ী রবিউল ইসলাম শুক্রবার রাতে তার প্রতিবেশী নাজিম নামে এক দিনমজুরের শোবার ঘরের জানালা দিয়ে উঁকি মারে। এ সময় নাজিমের স্ত্রী (নাম জানা যায়নি) ঘরে একাই ছিল। উঁকি দেয়ার বিষয়টি প্রতিবেশী এক মহিলা দেখে ফেলে এবং এর প্রতিবাদ করলে রবিউল তার গলা চেপে ধরে।
পরে ওই মহিলার চিৎকারে লোকজন এগিয়ে এলে পালিয়ে যায় রবিউল। এ ঘটনার পর নাজিম স্থানীয় গ্রাম প্রধানদের কাছে অভিযোগ দিলে শনিবার বিকালে সাবেক ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন গ্রাম প্রধান দুইপক্ষকে নিয়ে সালিশ বৈঠকে বসেন।পরে উঁকি দেয়ার বিষয়টি স্বীকার করায় গ্রাম প্রধানরা রবিউলকে গলায় জুতার মালা ও ঝাড়ু পরিয়ে ঘুরাতে হবে বলে রায় দেন। এরপর ছাইকোলা ইউনিয়ন পরিষদের চৌকিদার তৈয়ব হোসেন হাতে একটি লাঠি নিয়ে রবিউল ইসলামকে গলায় জুতার মালা পরিয়ে পুরো পাড়া ঘোরান।
তবে গলায় জুতার মালা ও ঝাড়ু পরানোর ঘটনাকে অমানবিক বলে আখ্যায়িত করেছেন অনেকেই। এদিকে ঘটনার সময় বেশ কয়েকজন মোবাইলে ভিডিওটি ধারণ করে ফেসবুকে পোস্ট দিলে বিষয়টি ভাইরাল হয়ে যায়।বিষয়টি জানতে চেয়ে রোববার দুপুরে রবিউল ইসলামের মোবাইলে ফোন দিলে সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে ‘আমি একটু পরে কথা বলছি’ বলে লাইন কেটে দেন। পরে কয়েকবার ফোন দিলেও তার মোবাইলটি বন্ধ পাওয়া যায়।এ ব্যাপারে গ্রাম প্রধান ও সাবেক ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম জানান, ‘অভিযোগ পাওয়ার পর দুইপক্ষকে নিয়ে বসেছিলাম। সালিশে রবিউল অভিযোগ স্বীকার করায় প্রধানরা রবিউলকে জুতার মালা পরিয়ে পাড়া ঘুরাতে হবে রায় দেন।’
পুলিশকে না জানিয়ে বিচার-সালিশ করে এমন রায় দেয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি তো একা এই রায় দেইনি। সবাই মিলে এই রায় দিয়েছেন। ভিডিওর বিষয়টি আমার জানা নেই।’এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ছাইকোলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম জানান, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি গত তিন দিন ধরে ঢাকায় আছি।’চাটমোহর থানার ওসি সেখ মো. নাসীর উদ্দিন বলেন, ‘কেউ আমাকে এমন কিছু জানায়নি বা অভিযোগ দেয়নি।
Leave a Reply